মাছ চাষের বর্ষপঞ্জি
মাছ চাষের বর্ষপঞ্জি
”পরিকল্পিত মাছ চাষ উৎপাদনশীলতায় বারো মাস ”
ডিসেম্বর – জানুয়ারি :
মাছ চাষের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জিং সময় তাপমাত্রায় ভিন্নতা দেখা যায় তাই পি এইচ ঠিক রাখা এবং রোগমুক্ত রাখার জন্য ভালো পরিচর্যা প্রয়োজন।
করণীয় :
# নিয়মিত মৎস্য পরামর্শক দ্বারা পর্যবেক্ষণ করে পদক্ষেপ নিন।
#পুকুরকে বিভিন্ন প্রকার ক্ষতিকর গ্যাস থেকে মুক্ত রাখুন।
# মাছের ঘনত্ব স্বাভাবিক অথবা তার চেয়ে কম রাখুন।
#পানির পুষ্টি নিশ্চিত করুন এবং রৌদ্র উজ্জ্বল আবহাওয়ায় খাবার দিন।
ফেব্রুয়ারি – মার্চ :
তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং মাছের খাবার গ্রহণ স্বাভাবিক হয়। মাছের বৃদ্ধির হার উন্নত হয়। এটা নার্সারি করার জন্য উপযুক্ত একটি সময়।
করণীয় :
# হঠাৎ করে খাবার অতিরিক্ত বৃদ্ধি করা থেকে বিরত থাকুন।
# পানির গুণগত মান উন্নত করার পদক্ষেপ নিন এবং মাছের দ্রুত বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিন।
# নার্সারি পুকুর তৈরির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এ সময়ে চাষ পুকুরে পানি দেয়ার ব্যবস্থা রাখা জরুরী।
# আগামী এক বছরের চাষ পরিকল্পনা তৈরি করুন প্রয়োজনে মৎস্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
এপ্রিল – মে:
চাষ পুকুর প্রস্তুতের সময়। বৃষ্টি শুরুর পূর্বেই পুকুরের তলদেশের অতিরিক্ত কাদা সরিয়ে তলদেশ রোদে শুকিয়ে নেয়া যেতে পারে। চিংড়ি চাষীদের জন্য এ সময় চিংড়ির পোনা পাওয়া যায়।
করণীয় :
# নার্সারি পুকুর পরিচর্যা আরো মনোযোগী হতে হবে।
# এ সময় প্রায় সকল প্রকার মাছের পোনা পাওয়া যায় তাই যে সকল পোনা প্রয়োজন তা সংগ্রহ করে নেয়া যেতে পারে।
#এবং ভালোভাবে পুকুর তৈরি করে চার শুরু করে দেয়া যায়।
#শিং মাগুর পাবদা চাষিরা পুরোদমে চাষ শুরু করে দিতে পারে।
জুন – জুলাই :
এ সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং মাছেরও সর্বোচ্চ বৃদ্ধির সময় এটি। তাই সময় নষ্ট না করে ভালো পরিচর্যার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ফলন নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।
করণীয় :
# পানিতে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিতে পারে এবং ব্লুম সৃষ্টি হতে পারে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।
# খাবার অপচয় হচ্ছে কিনা তা খেয়াল রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং মাছের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
# অধিক খাবার ব্যবহারের ফলে ক্ষতিকর গ্যাস বৃদ্ধি পেতে পারে তার খেয়াল রাখা ও তলদেশ পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
# পরজীবীর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
# কাঙ্ক্ষিত ফলাফল নিশ্চিত করার জন্য খাবারের সাথে প্রয়োজনীয় ভিটামিন মিনারেলস ব্যবহার করা।
আগস্ট – সেপ্টেম্বর :
বৃষ্টিপাত ধীরে ধীরে কমতে থাকে মাছ বিক্রির উপযোগী হয়ে যায়। তাই প্রথম দফা বিক্রয় উপযোগী মাছের বিক্রির পদক্ষেপ নেয়া যায়। অতি বৃষ্টির ফলে উৎপাদিত আগাছা পরিষ্কার করে ফেলা ভালো।
করণীয় :
#পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাবারের যোগান দেয়া
#মাছের ঘনত্ব ঠিক আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।
#বিক্রয় উপযোগী মাছ বিক্রি করা ও পুনরায় মজুদের পদক্ষেপ নেয়া।
#মাছ এবং পানির গুনাগুন পর্যবেক্ষণ করে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়া।
অক্টোবর – নভেম্বর:
বৃষ্টি প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে শীতের আগমন ঘটে। পুকুরের পানি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। শীতকালীন রোগের প্রাদুর্ভাত থেকে মুক্ত রাখার সময়ে এটি।
করণীয় :
# শীত আসার পূর্বেই শীতকালীন রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
# উপকারী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি নিশ্চিত করে পুকুরের পরিবেশ ঠিক রাখা জরুরী।
# খাবার প্রয়োগের ব্যাপারে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
# পানির প্যারামিটার গুলো ঠিক রাখার ব্যবস্থা নেয়া।